রিমা আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আগের মতো আর ঘুম আসে না, যে পাশেই শোয় সেই অস্বস্তি। পেটের ভারে একদিকে কাত হওয়া কষ্টকর, অন্যদিকে ব্যথা শুরু হয় কোমরে। প্রতি রাতে সে ভাবে, “কী করলে একটু আরাম পাওয়া যাবে?” একদিন এক বন্ধুর পরামর্শে সে প্রেগনেন্সি পিলো কিনে নিল। প্রথম রাতেই সে বুঝতে পারল, এই পিলো যেন তার জন্য আশীর্বাদ!
আপনিও কি গর্ভাবস্থায় ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন? তাহলে প্রেগনেন্সি পিলো আপনার জন্য হতে পারে সেরা সমাধান
প্রেগনেন্সি পিলো কী?

প্রেগনেন্সি পিলো হল বিশেষ ধরনের বডি পিলো, যা গর্ভবতী নারীদের আরামদায়ক ঘুম এবং শারীরিক সমর্থন দিতে তৈরি করা হয়েছে। এটি কোমর, পেট, পিঠ এবং পায়ের চাপ কমিয়ে রাতের ঘুমকে আরামদায়ক করে তোলে।
প্রেগনেন্সি পিলো কেন অপরিহার্য:
গর্ভাবস্থায় একজন মা শারীরিক ও মানসিক নানা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যান, যার মধ্যে পিঠের ব্যথা, কোমরের অস্বস্তি ও ঘুমের সমস্যা অন্যতম।
গবেষণা অনুযায়ী, ৭৫% গর্ভবতী নারী রাতে ভালোভাবে ঘুমাতে পারেন না, যা তাদের স্বাস্থ্য ও শিশুর বিকাশে প্রভাব ফেলে।
প্রেগনেন্সি পিলো শরীরের সঠিক সাপোর্ট দিয়ে পিঠ ও কোমরের চাপ কমায়, রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে এবং আরামদায়ক ঘুম নিশ্চিত করে।
বিশেষ করে, U-শেপড ও C-শেপড পিলো গর্ভবতী মায়েদের জন্য সবচেয়ে কার্যকর। মায়ের আরাম মানেই গর্ভের শিশুর সুস্থতা, তাই গর্ভাবস্থার প্রতিটি রাত স্বস্তিদায়ক করতে প্রেগনেন্সি পিলো এক অমূল্য সঙ্গী ।

প্রেগনেন্সি পিলোর উপকারিতা:
গর্ভাবস্থায় মায়েদের ঘুমের সমস্যা খুবই সাধারণ, বিশেষ করে ৩০ সপ্তাহের পর ৮০% নারী ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না। প্রেগনেন্সি পিলো এই সমস্যার কার্যকর সমাধান দেয়। এটি পিঠ, কোমর ও পেটের চাপ কমিয়ে শরীরকে আরাম দেয়, ফলে ঘুম স্বাভাবিক হয়।
এছাড়া, এটি সঠিক রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে, যা গর্ভের শিশুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাশ ফিরে শোয়ার সময় পেটের ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে এবং পায়ের ফোলাভাব কমায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রেগনেন্সি পিলো ব্যবহার করলে গর্ভকালীন ব্যথা ও অস্বস্তি ৬০% পর্যন্ত কমে। তাই একজন মায়ের জন্য এটি শুধু একটি পিলো নয়, বরং নিঃশর্ত আরামের প্রতীক।
শরীরের সঠিক সাপোর্ট প্রদান করে
গর্ভাবস্থায় সময়ে পিঠ ও কোমরের ব্যথা সাধারণ সমস্যা। প্রেগনেন্সি পিলো সঠিক সমর্থন দিয়ে শরীরের চাপ কমায়।
আরামদায়ক ঘুম নিশ্চিত করে
বড় পেটের কারণে অনেকে ঠিকমতো শুতে পারেন না। এই পিলো শরীরকে সঠিক ভঙ্গিতে রাখতে সাহায্য করে, ফলে ঘুমের মান উন্নত হয়।
রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে
ডাক্তাররা গর্ভাবস্থায় বাম পাশে শোওয়া পরামর্শ দেন, কারণ এতে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। প্রেগনেন্সি পিলো এই অবস্থানে শোয়া সহজ করে তোলে।
হজম সমস্যা দূর করে
গর্ভাবস্থায় অ্যাসিডিটি এবং গ্যাসের সমস্যা সাধারণ ব্যাপার। সঠিকভাবে শোয়ার ফলে এসব সমস্যা কমে যায়।
সিজারিয়ান বা স্বাভাবিক প্রসবের পরও ব্যবহার করা যায়
শুধু গর্ভাবস্থায় নয়, প্রসবের পরও কোমরের ব্যথা কমাতে এবং শিশুকে দুধ খাওয়ানোর সময় আরাম পেতে এটি ব্যবহার করা যায়।

কোন ধরনের প্রেগনেন্সি পিলো বেছে নেবেন?
বাজারে বিভিন্ন ধরনের প্রেগনেন্সি পিলো পাওয়া যায়। আপনি নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী নিচের ধরণগুলো থেকে বেছে নিতে পারেন:
- U-শেপড পিলো – পুরো শরীরকে ঘিরে রাখে, সবচেয়ে বেশি সাপোর্ট দেয়।
- C-শেপড পিলো – মূলত কোমর ও পিঠের ব্যথার জন্য উপযোগী।
- J-শেপড পিলো – যারা অল্প জায়গায় পিলো ব্যবহার করতে চান, তাদের জন্য উপযুক্ত।
- WEDGE পিলো – ছোট আকারের, শুধুমাত্র পেট বা কোমরের নিচে ব্যবহার করা যায়।
FAQ: প্রেগনেন্সি পিলো সম্পর্কে সাধারণ প্রশ্ন
১. গর্ভাবস্থার কত মাস থেকে প্রেগনেন্সি পিলো ব্যবহার করা যায়?
সাধারণত ৩-৪ মাসের পর থেকেই ব্যবহার করা যায়। তবে, শরীরের অস্বস্তি শুরু হলে আগে থেকেই ব্যবহার করা যেতে পারে।
২. এটি কি ধোয়া যায়?
হ্যাঁ, বেশিরভাগ প্রেগনেন্সি পিলোর কভার আলাদা করে ধোয়া যায়।
৩. এটি কি প্রসবের পরও ব্যবহার করা যাবে?
হ্যাঁ, প্রসবের পর কোমরের ব্যথা কমানো ও শিশুকে দুধ খাওয়ানোর সময় এটি সহায়ক।
৪. কোথায় পাওয়া যাবে?
অনলাইন মার্কেটপ্লেস এবং গর্ভকালীন পণ্য বিক্রয়কারী দোকান থেকে কিনতে পারেন।
গর্ভকালীন অস্বস্তি কমিয়ে নিশ্চিন্ত ঘুম পেতে প্রেগনেন্সি পিলো হতে পারে আপনার সেরা বন্ধু। যদি আপনিও আরামের ঘুমের জন্য চেষ্টা করে থাকেন, তাহলে আজই একটি ভালো মানের প্রেগনেন্সি পিলো কিনে নিন।
আপনার কি প্রেগনেন্সি পিলো ব্যবহারের অভিজ্ঞতা আছে? কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না এবং এই তথ্যটি আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন ।
জেনে নিন: